কেন শিখব এস.ই.ও?


কেউ কেন সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন করাবে?
আমার পূর্ব্ববর্তী উদাহরণ থেকে অনেকটাই বোঝা যাচ্ছে কেন একটা কোম্পানী বা প্রতিষ্ঠান তার প্রোডাক্ট, সার্ভিস ইত্যাদির জন্য এস.ই.ও করাবে। তারপরও আরেকটু পরিষ্কার করে বলি।পুরো ব্যাপারটাই কোন সার্ভিস বা প্রোডাক্টের মার্কেটিং বা প্রোমশনের জন্য করা হবে। যেমন এক্সপোনেন্ট যদি অপ্টিমাইজেশন না করাত গুগলে তাহলে আমি সার্চ করে এক্সপোনেন্টকে না পেয়ে অন্য কোন প্রতষ্ঠানকে পেতাম যারা এস.ই.ও করিয়েছে, এবং অবশ্যই ফিজিক্যাল মার্কেটে তারা এক্সপোনেন্টের প্রতিদন্ধী। এর মানে হল এক্সপোনেন্ট অনেকটা পিছিয়ে গেল তাদের ব্যবসার দিক থেকে তাতে প্রতিদন্ধীদের তুলনায়। আর এই কারণেই মার্কেট লিড করার জন্য, গ্রাহকের কাছে পৌছানোর জন্য সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন করাবে একটা প্রতিষ্ঠান। কারণ এখন পৃথিবী অনেকটাই প্রযুক্তিগতভাবে এগিয়ে, সাথে বাংলাদেশও এগিয়ে যাচ্ছে। আর ইন্টার্নেট ঘেটে নিজের জন্য তথ্য বের করে কাজ হাসিল করার প্রবণতাও বাড়ছে, তাই ব্যবসায়ীদেরও পৌছাতে হবে ইন্টার্নেটে যাতে ঐ গ্রাহক গুলো হাতছাড়া না হয়।
কেন শিখব এস.ই.ও? এস.ই.ও এর চাকুরীর বাজার কেমন?
এস.ই.ও অনেক বড় একটা ইন্ডাস্ট্রি, তাই শিখব বললেই সব শেখা সম্ভব নয়। যা প্রয়োজন তা শিখে নিতে হয়।সেই দিক থেকে এস.ই.ও দুই কারণে শেখা হয়। ১. নিজের প্রয়োজন মেটাতে ২. এস.ই.ও তে কেরিয়ার গড়তে।
আমি লিখব ভাল কথা, জানবেই তো না কেউ। আরেকটু ঘেটে জানলাম সার্চ ইঞ্জিনে নাকি অপ্টিমাইজ করতে হয়। আমার মামাত ভাইও অনেক আগে থেকেই আউটসোর্সিং এর সাথে জড়িত থাকায় তার কাছ থেকেও জিজ্ঞাসা করা হত, কিন্তু ফোনালাপে ব্যাপারগুলো অনেক বেশি ঝামেলার লাগত। যদিও তখন আর হাত দিইনি অনেক দিন। আর এখন ভাবি, হায় যদি এস.ই.ও নিয়ে আরও ঘাটতাম এবং কাজে লাগাতাম, তাহলে এইটা আমার জন্য অনেক কাজে দিত, এখন এস.ই.ও, এডসেন্স আয় যতটা কঠিন তখন ততটায় সহজ ছিল। কাজে লাগাতে পারিনি। আর এই অভিজ্ঞতা বলেই বোঝাতে চাইলাম এস.ই.ও নিজের কাজেও অনেক খানি দরকার। নিজের ব্লগ থাকলে এস.ই.ও করে ভিজিটর বাড়ানো যায়, যাতে আয় বাড়ে। আপনি গ্রাফিক্স ডিজাইনার? আপনি ওয়েব ডিজাইনার? আপনি যে ভাল ডিজাইনার সেটা মানুষ বুঝবে কি করে? একটা পোর্টফলিও বানান, আর এস.ই.ও করুন। যদি কারও গ্রাফিক্স ডিজাইনার প্রয়োজন হয় সে যদি সার্চ দেয় “best graphics designer” আর রেজাল্টে আপনার পোর্টফলিও সাইট পেয়ে যায়, আপনি নিজেই ভাবুন না, লাভটা কি হবে?? আপনার কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে।
এস.ই.ও পেশা হিসেবে চরম সম্ভাবনাময়। আগের আলোচনা থেকে অনেকটাই উঠে এসেছে যে কেন এখনকার মার্কেট জায়ান্ট কোম্পানি হতে গেলে ইন্টার্নেট তথা গুগলের সাহায্য নিতে হবে। আর একটা কোম্পানি তো অবশ্যই কিছু কর্মীর সমন্বয়ে হয়। আর ভেবে দেখুন না এস.ই.ও যেহেতু অনেক বড় একটা ব্যাপার সেহেতু অবশ্যই একটা কোম্পানীর জন্য এস.ই.ও মার্কেটিং এর জন্য এক থেকে একাধিক কর্মী লাগবেই, সেটা পার্মানেন্ট হিসেবে হউক অথবা আউটসোর্সড। আর এটা বলার অপেক্ষা রাখেনা যে এখনকার এমন কোন প্রতিষ্ঠান নেই যাদের ইন্টার্নেট নির্ভর মার্কেটিং দরকার নেই, ইকমার্স ভেঞ্চার বলুন আর ট্রেইনিং সেন্টারই বলুন, সবারই দরকার। আর যেহেতু আউটসোর্সিং আপনাকে শুধু দেশের অভ্যন্তরে নয়, পৃথিবীর যেকোন প্রান্তের জন্য কাজ করার দ্বার খুলে দিয়েছে, আসলেই কি কাজের অভাব হবে?
আয়ের কথাই যদি বলি, কাজের ধরন অনু্যায়ী ২ ডলার থেকে ১ হাজার ডলারেরও কাজ করতে পারবেন।সাম্প্রতিক “ক্রিয়েটিভ আইটি” নামে বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান এস.ই.ও এর কাজের একটা কন্টেস্টে পুরো পৃথিবীতে প্রথম হয়েছে।
এস.ই.ও তে মুখোমুখি হতে হয় এমন সমস্যাঃ
আমার অভিজ্ঞতায় আমি দেখেছি এবং মুখোমুখি হতে হয়েছে এমন কিছু সমস্যা হল,
১. যখন অন্য কারও জন্য এস.ই.ও করতে হয়, একটা সার্ভিস হিসেবে তখন ক্লায়েন্টকে ফলাফল সম্পর্কে পরিপূর্ণভাবে আস্বস্থ করা সম্ভব হয়না, যে অবশ্যই ডেডলাইনের মধ্যেই সাইট প্রথম পেইজে আসবে গুগলে বা পেইজ রেঙ্ক বেড়ে একটা নির্দিষ্ট মান হবে। এর প্রধান কারণ গুগলের এলগরিদম প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হওয়া। কেম্পেইনের শুরুতে এক মেথড ব্যবহার করলে দেখা যায় মাঝখানেই আবার এলগরিদম পাল্টেছে।
২. এস.ই.ও এর প্রতিনিয়ত আপডেট গুলোর সাথে তাল মিলিয়ে থাকতে না পারা।
৩. এস.ই.ও অটোমেশন বা একটা সয়ংক্রিয় এস.ই.ও কেম্পেইন তৈরি করলে দেখা যায় গুগল এলগরিদমের নড়াচড়ার কারণে কেম্পেইন নষ্ট হয়।
৪. শুরুর দিকে অনবিজ্ঞ হওয়ার কারণে অনেকেই গুগল সার্চ করে পুরনো মেথড গুলো শিখে সেগুলো কাজে লাগাতে চায়, আর সেখানেই বিপত্তি, গুগল এলগরিদম এমনভাবে পরিবর্তন হচ্ছে যে আজকের ইথিকাল বা হোয়াইটহেট এস.ই.ও আগামীকাল এলগরিদম পরিবর্তনের ফলে আন-ইথিকাল বা ব্ল্যাকহেট এস.ই.ও তে রূপ নেয়। আর ব্ল্যাকহেট এস.ই.ও করা মানে হিতে বিপরীত হওয়া।

কেন এস.ই.ও কোর্স করা দরকার? শেখার জন্য গুগলই পর্যাপ্ত নয় কি?
হ্যা, অবশ্যই গুগল পর্যাপ্ত, কারণ গুগল থেকে পুরো পৃথিবীর ট্রেইনার দের রিসোর্স আমরা পাচ্ছি।
কিন্তু বোঝার ব্যপার হল, আমি যেসব সমস্যার কথা বলেছি, এর মধ্যে ৪র্থ নম্বরে বললাম গুগল থেকে যে পুরনো মেথড শিখে কাজে লাগায় তা উলটো রেজাল্ট দেয়, যেমন গুগলের পেইজে দেখাও না যেতে পারে আপনার সাইট। আপনি কিভাবে বুঝবেন যে ঐগুলো পুরনো হয়ে গিয়েছে কিনা?? আবার যেহেতু ব্লগিং করে আয় করা যায় সেহেতু অনেক অদক্ষ এস.ই.ও ওয়ার্কাররাও এস.ই.ও নিয়ে টিউটোরিয়াল লিখতে পারে যাতে অনেক ভুল থাকে, তার মানে আপনি ভুল শিখবেন।
সব মিলিয়ে বলতে গেলে একজন সয়ংসম্পূর্ণ মেন্টর আপনার দরকার রয়েছে শেখার জন্য। তবে এইটা তো আর ইংরেজি আর অংকের মত বিষয় নয় যে প্রাইভেট টিউটর রাখবেন, এর জন্য দরকার একটি ট্রেইনিং সেন্টার।ট্রেইনিং সেন্টার সম্পর্কে আমার তিক্ত অভিজ্ঞতা আছে, বাংলাদেশের ৯০% ট্রেইনিং সেন্টারই একটা সিলেবাস ধরিয়ে দেয় আর টুকটাক ট্রেইন করার নামে টাকা হাতিয়ে নেয়। তাই আমি ট্রেইনিং সেন্টার পছন্দ করিনা। তবে এখন কিছু ট্রেইনিং সেন্টার রয়েছে যাদের ব্যাপারে আমার পজিটিভ ভিউ আছে। এর কারণ হল এইসব ট্রেইনিং সেন্টারের কর্ণধার এবং ট্রেইনাররা ফেসবুক, ব্লগ ইত্যাদি মাধ্যমে হাজার হাজার এস.ই.ও বা অন্যান্য কোন বিষয়ে পরামর্শ দিয়ে আসছেন, শিখিয়ে আসছেন এবং তাও সম্পূর্ণ বিনামূল্যে। আর যারা বিনামূল্যে এভাবে শিখিয়ে যাচ্ছেন, তারা নাম মাত্র ফী নিয়ে কোর্স করালে যে কিছু শেখাবেন না অন্যদের মত এটা কেউ বললে সে বোকার স্বর্গের বাসিন্দা ছাড়া আর কিছু নয়।
কেন শিখব এস.ই.ও? কেন শিখব এস.ই.ও? Reviewed by Mamun IT Solution on May 09, 2017 Rating: 5

No comments:

Powered by Blogger.